❝তোমাদের দুআর চেয়ে আল্লাহর দয়া অনেক বেশি!❞ — নবিজি (ﷺ)
মসজিদে ঢুকলেই দেখতে পেতাম লুঙ্গি-পাঞ্জাবী পড়া এক ভদ্রেকলোক একা একা বসে হাত তুলে দুআ করছেন। সুন্নাত শেষ করা মাত্র দেখলাম আবার একা দুআয় মগ্ন হয়ে আছেন। ফরজ জামআত শেষ করে আরেকবার সবার সাথে দুআয় সামিল হয়ে গেলেন। ফরজের পরের দুই রাকাআত সুন্নাত আদায় করে ফের দুআয় মগ্ন হলেন। তাকে এতো এতো বার দুআ করতে দেখে চিন্তায় পড়ে গেলাম। এই লোকের মনেহয় মাথায় কোনো সমস্যা আছে?
দুআয় যা চাওয়ার তা তো একবারে চেয়ে নিলেই হয়। বারবার কি দরকার?
পরক্ষণেই মনে পড়লো, আমি যা ভাবছি তা অন্যায়। আগে তো যাচাই করে দেখা দরকার…
খুঁজে পেলাম একটি হাদিস যেখানে,
আবূ সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, 'নবি (ﷺ) বলেছেন,
❝যদি কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে এমন দুআ করে, যার মাধ্যমে কোনো গুনাহের ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের বিষয় নেই, তা হলে আল্লাহ তাকে তিনটি বিষয়ের মধ্যে যেকোনো একটি বিষয় অবশ্যই দেবেন—
১. হয়তো তাড়াতাড়িই তার দুয়া কবুল করা হবে, অথবা
২. আখিরাতে তার জন্য এটিকে জমা করে রাখা হবে, অথবা
৩. তার কাছ থেকে এর সমপরিমাণ কোনো বিপদাপদ দূর করে দেওয়া হবে।❞
সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ❝ তা হলে তো আমরা বেশি বেশি দুআ করব!❞
নবি (ﷺ) বলেন, ❝তোমাদের দুআর চেয়ে আল্লাহর দয়া অনেক বেশি!❞ [১]
আমি বুঝতে পারলাম লোকটা পাগল নয়, বরং আমরাই পাগল। আলসেমি করে একবার হাত তোলে দুআ করে ভাবি, সব বুঝি চাওয়া হয়েগেছে, আল্লাহ দুআ কবুল করলেই হয়।
কিন্তু একবার শেষ করে আবার দুআ করার ইচ্ছে করিনা, এটা আমাদের দূর্ভাগ্য।
শয়তান আমদেরকে খুব সহজ একটি আমল থেকে সবসময় বিরত রাখে।
জীবনে সফল হতে হলে দুআর সংখ্যা বাড়িয়ে দিন। ভিক্ষুক যেভাবে ভিক্ষার জন্য বারবার হাত পাতে সেভাবে বারবার আল্লাহর কাছে আমাদের হাত পাততে হবে।
হে আল্লাহ আমাদের তাওফিক দেন..
———————————————
[১] আহমাদ, আল-মুসনাদ, ১১১৩৩
আলহামদুলিল্লাহ
উত্তরমুছুন