বুধবার, ২৯ জুন, ২০২২

আল্লাহর ভালবাসা পেয়ে গেলে দুনিয়ার সৌন্দর্য এবং রূপ তার কাছে মূল্যহীন।

একটি বিচিত্র প্রেমের গল্প বলতে এসেছি, শুনতে চান তো? তাহলে শুরু করা যাক,


এক দেশে একজন খুবই রূপবতী রাজকন্যা বাস করতো। সেই রাজকন্যার একমাত্র শখ ছিল নিজের টাকা খরচ করে একটি সুন্দর মসজিদ বানাবে। তার গয়নাগাটি যা ছিল সব বিক্রি করে দিল। মায়ের দেওয়া কিছু গয়না সহ আরো যা অলংকার ছিল সেগুলোও বিক্রি করে দিল। এতে যা টাকা হলো তা দিয়েই মসজিদের কাজ শুরু হলো। দেশ বিদেশ থেকে অনেক নামকরা মিস্ত্রি দিয়ে মসজিদ নির্মাণের কাজ চলতে লাগলো।


মসজিদের কাজের অগ্রগতি দেখতে রাজকন্যা একদিন মসজিদ ঘুরতে বেরুলেন। সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হলো। কোনো পুরুষ নেই তাই রাজকন্যা নিজের নেকাব খুলে বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরেফিরে মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে লাগলেন। মসজিদের মিনারে তখন এক যোগালি ছেলে কাজ করছিল তাকে কেউ নামতে বলেনি। সে যখন নিচে নেমে দেখতে পেল অনেকগুলো পরী মসজিদে ঘুরছে। সে রাজকন্যার রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে গেল। এক দেখাতেই সে রাজকন্যার প্রেমে পড়ে গেল। লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের চলে যাওয়া পর্যন্ত তাকে দেখতে থাকলো।


সেই যোগালি ছেলেটি উন্মাদের মতো নিজের বাসায় ফিরে গেল। তার মা তার এইরকম পাগল প্রায় অবস্থা দেখে উদগ্রিব হয়ে জানতে চাইলেন,  কি হয়েছে বাবা? সে  তার মাকে রাজকন্যার কথা খুলে বলল। বলল, সে রাজকন্যাকে বিয়ে করতে চায়। মা বললেন, কোথায় রাজকন্যা আর কোথায় তুমি? যোগালি তো নাছোড়বান্দা সে রাজকন্যাকেই বিয়ে করবে। তা না হলে মরে যাবে। মা পড়ে গেলেন মহাবিপদে।


ছেলেটির মা রাজদরবারে রাজকন্যার সঙ্গে দেখা করতে চলে গেলেন। রাজকন্যা ছিলেন অত্যন্ত মিশুক প্রকৃতির। রাজপ্রাসাদে যারাই আসেন সবার সাথে দেখা করেন। ছেলেটির মা রাজকন্যাকে পুরো ঘটনা খুলে বললেন। উত্তরে রাজকন্যা বললেন, আমি বিয়েতে রাজী। কিন্তু শর্ত হলো, আপনার ছেলেকে একটানা চল্লিশদিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামায তো পরবেই সাথে তাহাজ্জুদ নামাজও পড়তে হবে। একদিনও বাদ দেওয়া যাবে না।


শর্ত শোনে ছেলেটি তো খুব খুশী। এ আর তেমন কি! ছেলেটি প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায আর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে শুরু করলো। খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তো। কারণ নামাযে দাঁড়ালেই রাজকন্যার মায়াবী মুখ ভেসে উঠতো। সে আরো আগ্রহ নিয়ে পড়তে আরম্ভ করলো। এভাবে চল্লিশদিন পূর্ণ হতে চললো। ছেলেটির মা তো বেজায় খুশী রাজকন্যার সাথে ছেলের বিয়ে হবে।


কিন্তু যেদিন চল্লিশদিন শেষ হলো,

ছেলেটি তার মাকে ডেকে বলল, তুমি রাজপ্রাসাদে গিয়ে রাজকন্যাকে বলে দিও আমি আর তাকে বিয়ে করতে চাই না। আমি তার রূপ দেখে সাময়িক সময়ের জন্য তার প্রেমে মজে গিয়েছিলাম। এখন আমি স্থায়ী প্রেমের সন্ধান পেয়ে গেছি। আর সে প্রেম হচ্ছে আল্লাহর প্রেম।




মা অবাক হয়ে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন, তার ছেলে যে নিজের হাতে নিজের পায়ে কুড়াল মারছে।


ছেলেটির মা রাজকন্যাকে গিয়ে সব বললেন। রাজকন্যা একটি হাসি দিয়ে বললেন, আমি জানতাম এমনিই ঘটবে। আল্লাহর ভালবাসা পেয়ে গেলে দুনিয়ার সৌন্দর্য এবং রূপ তার কাছে মূল্যহীন।


__________________________________


গল্পটি পড়েছিলাম "আতিক উল্লাহ (হাফি.)" এর একটি বইতে। গল্পের নাম "বিচিত্র প্রেম"। মূলভাবটা ধরে রেখে নিজের মতো করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।


https://www.facebook.com/rumadhussen

1 টি মন্তব্য:

নতুন নতুন এন্ড্রয়েড ফোন এসেছে

  নতুন নতুন এন্ড্রয়েড ফোন এসেছে এলাকায়। নতুন এই ফোনের ফাংশনের সাথে সবাই অপরিচিত। আসার পর অনেকের ফোনের ফাংশন, সেটিং বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে...