জ্ঞানীরা-ই উপদেশ গ্রহন করে…
মহাজগতের অদৃশ্য বস্তু নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সেই আদিমকাল থেকেই চলে আসছে অদৃশ্যকে দেখার প্রতিযোগিতা। কোনো এক গবেষণা পত্রে পড়েছিলাম মানুষ এই অত্যাধুনিক যুগে এসেও এতো এতো ক্ষমতাশীল যন্ত্রপাতি দিয়ে মহাবিশ্বের যতটুকু জানতে পেরেছে, দৃশ্যমান বস্তু দেখতে পারছে তা মাত্র ৫ পারসেন্ট, আর বাকী পঁচানব্বই ভাগ-ই এখনো জানার বাইরে। [১]
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী নিউটনের শেষ কথা ছিল, ❝আমি জ্ঞান সমুদ্রের বালুকণার বেলায় দাঁড়িয়ে শামুক-ঝিনুক নিয়ে খেলা করেছিলাম, অথৈ জ্ঞানসমুদ্র অজানাই রয়ে গেল।❞ জগৎখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিসও বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, ❝আমি একটি বিষয় জানি যে, আমি কিছুই জানি না।❞
আসলে মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সীমাবদ্ধ জ্ঞান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ পাক যতটুকু ইচ্ছে করেন ততটুকুই মানুষ জানতে পারে এবং ততটুকুই তার পক্ষে জানা সম্ভব হয়।
আল্লাহ তা'আলা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, ❝তোমাদের (মানুষকে) অতি সামান্য জ্ঞান দেয়া হয়েছে।❞[২] আসলেই আমাদের জ্ঞানভাণ্ডার খুবই ক্ষুদ্র, আমরা আমাদের এই ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক দিয়ে যা-ই জানতে পারি না কেনো তা একটি বালুকণার দানার সমানও নয়।
আল্লাহ তা'আলা আরো বলেছেন,
❝নিশ্চয়ই এর মাঝে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে।❞[৩] ❝যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদায় আরো উন্নতি দান করবেন।❞[৪] ❝যারা জানে (জ্ঞানী) এবং যারা জানে না (মূর্খ) তারা কি সমান? বোধশক্তিসম্পন্ন জ্ঞানী লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণকরে।❞[৫]
❝তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভূত কল্যাণকর বস্তুপ্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান।❞[৬]
❝প্রত্যেক জ্ঞানীর উপর আছেন এক মহাজ্ঞানী (আল্লাহ)।❞[৭]
এই আয়াতগুলো পড়ে আমরা সহজে উপলব্ধি করতে পারি, আল্লাহ আমাদেরকে জ্ঞান আহরণের দিকে উৎসাহিত করেছেন। যাতে সেই জ্ঞান দ্বারা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে পারি, এবং উনার উপদেশ গ্রহন করি।
❝হে আমার বর! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও।❞[৮]
হে আল্লাহ! আমাকে তুমি যা শিখিয়েছ তা দিয়ে আমাকে উপকৃত কর, আমার জন্য যা উপকারী হবে তা আমাকে শিখিয়ে দাও এবং আমার ইলম (জ্ঞান) বাড়িয়ে দাও। সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা এবং আমি জাহান্নামীদের অবস্থা থেকে হিফাযাতের জন্য আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থণা করি।[৯]
(আমিন)
— রুমাদ হোসেন
——————————————————
সূত্র:
[১]
https://science.nasa.gov/astrophysics/focus-areas/what-is-dark-energy
https://www.britannica.com/science/dark-matter
[২] (সূরা বনি ইসরাইল ৮৫)
[৩] (সূরা হিজর-৭৫)
[৪] (সূরা মুজাদালাহ-১১)
[৫] (সূরা জুমার-৯)
[৬] (সূরা বাকারা-২৬৯)
[৭] (সূরা ইউসুফ-৭৬)
[৮] (সূরা তাহা-১১৪)
[৯] (জামে আত-তিরমিজি ৩৫৯৯)